
জুলাই৩৬ নিউজ ডেস্ক | ২১ জুলাই ২০২৫
রাজধানীর উত্তরা মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে সোমবারের ভয়াবহ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় এক মানবিক বীরত্বের সাক্ষী হয়ে থাকলেন শিক্ষিকা মেহেরীন চৌধুরী। মৃত্যুর আগে অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থীকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভবন থেকে বের করে এনেছিলেন তিনি। তবে নিজের জীবন আর রক্ষা করতে পারেননি। দগ্ধ অবস্থায় ভর্তি হয়েছিলেন জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে। সেখানেই মঙ্গলবার ভোরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ৪৬ বছর বয়সী এই আদর্শ শিক্ষিকা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও সহকর্মীরা জানান, বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শ্রেণিকক্ষগুলোতে আগুন ধরে যায়। তখন শিক্ষিকা মেহেরীন চৌধুরী নিজে ছুটে গিয়ে একে একে শিক্ষার্থীদের বের করে আনেন। একাধিক ছাত্র-ছাত্রী জানায়, “ম্যাডাম আমাদের বলছিলেন ‘ভয় পেও না, আমি সঙ্গে আছি’। সবাইকে ঠেলে দিয়ে বের করে দিচ্ছিলেন। নিজে বের হওয়ার আগেই ম্যাডাম আগুনে আটকে যান।”
বার্ন ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা গেছে, তাঁর শরীরের ৭২ শতাংশ দগ্ধ ছিল। চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে রাত ৩টার দিকে তিনি মারা যান।
জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের প্রধান ডা. সামিউল হক বলেন, “তিনি একজন সত্যিকারের বীর। এমন মানুষ আমাদের সমাজে বিরল। তাঁর আত্মত্যাগ ইতিহাস হয়ে থাকবে।”
এই ঘটনায় দেশের শিক্ষা জগতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোক ও শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন সহকর্মী, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। অনেকে তাঁকে ‘মাইলস্টোনের নায়িকা’ হিসেবেও আখ্যা দিচ্ছেন।
শিক্ষিকা মেহেরীন চৌধুরীর পরিবার জানায়, তিনি ইংরেজি বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক ছিলেন। দুই সন্তানের মা। তাঁর বড় সন্তান এইচএসসি পরীক্ষার্থী।