ঢাকা | বঙ্গাব্দ

ইতিহাসের বৃহত্তম সমাবেশ” করতে চায় জামায়াত, প্রস্তুত সোহরাওয়ার্দী উদ্যান

  • নিউজ প্রকাশের তারিখ : Jul 18, 2025 ইং
ছবির ক্যাপশন:
ad728

অনলাইন প্রতিনিধি,

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর উদ্ভূত রাজনৈতিক বাস্তবতায় রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজ শনিবার দুপুর ২টায় জাতীয় সমাবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির দাবি, এ সমাবেশে ১০ লাখের বেশি মানুষের অংশগ্রহণ হবে—যার জন্য বিশেষ ট্রেন, বাস ও নৌযান রিজার্ভ করা হয়েছে এবং সারাদেশে ব্যাপক সাংগঠনিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

নেতাকর্মীদের ঢল, রাত থেকেই স্লোগানে মুখর উদ্যান

শুক্রবার (১৮ জুলাই) বাদ আসর থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত ও জেলা থেকে নেতাকর্মীরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসতে শুরু করেন। সন্ধ্যার পর তাদের উপস্থিতি ব্যাপক আকার ধারণ করে। মাগরিবের সময় উদ্যান জুড়ে ‘লিল্লাহি তাকবির আল্লাহু আকবার’ ও ‘জামায়াতে ইসলামী জিন্দাবাদ’ স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে চারপাশ।

রাজধানীসহ ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে ব্যানার, পোস্টার, মাইকিং ও সাংস্কৃতিক প্রচারণা চালিয়েছে জামায়াত। শাহবাগ, বাড্ডা, মিরপুর, মহাখালীসহ গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে ১৯ জুলাইয়ের সমাবেশে যোগদানের আহ্বানসংবলিত ব্যানার দেখা গেছে।

জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসান মাহবুব জোবায়ের বলেন, “আমরা ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সমাবেশ আয়োজন করছি। এখন পর্যন্ত ১০ হাজারের বেশি বাস, একাধিক ট্রেন এবং নৌপথে লঞ্চ রিজার্ভ করা হয়েছে।”

সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার জানান, “উত্তরবঙ্গ থেকে ১৫০০ বাস, চট্টগ্রাম-ঢাকা ও রাজশাহী-ঢাকা রুটে বিশেষ ট্রেন এবং লঞ্চে রাজধানীমুখী যাত্রা চলছে। অনেকে আত্মীয়-স্বজনের বাসায় থেকেও সমাবেশে অংশ নিচ্ছেন।”

সমাবেশের ৭ দফা জাতীয় দাবি
জামায়াত তাদের জাতীয় সমাবেশে ৭টি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় দাবি উপস্থাপন করবে। দাবিগুলো হলো:
২০২৪ সালের ৫ আগস্টসহ পূর্ববর্তী গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করা। রাষ্ট্রের সর্বস্তরে মৌলিক সংস্কার, ঐতিহাসিক জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন, অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পুনর্বাসন, সংখ্যানুপাতিক ভোট ব্যবস্থা (PR system) চালু, প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত।
রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য সমান সুযোগ ও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড। সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও প্রযুক্তি ব্যবস্থাপনা। মাঠে মোতায়েন থাকবে ৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবক, থাকবে দায়িত্ব ভাগ করা বিশেষ পোশাক ও কার্ড।

থাকছে ১৫টি মেডিক্যাল বুথ – প্রতিটিতে এমবিবিএস ডাক্তার, জরুরি ওষুধ, অ্যাম্বুলেন্স। অনুষ্ঠান লাইভ সম্প্রচার করা হবে ফেসবুক, ইউটিউবসহ ডিজিটাল মাধ্যমে। ড্রোন ও আধুনিক ক্যামেরায় সমাবেশ ভিডিও ধারণ ও পর্যবেক্ষণ করা হবে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাথে বৈঠকে ট্র্যাফিক, নিরাপত্তা ও জনস্রোত নিয়ন্ত্রণে যৌথ সমন্বয় হয়েছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।

অংশগ্রহণে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান

ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক দলকে সমাবেশে অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। যদিও বিএনপির পক্ষ থেকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সমাবেশে যোগ দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।

রাজনৈতিক বার্তা ও নেতৃত্বের বক্তব্য

সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান, যিনি সমাবেশে রাজনৈতিক দিকনির্দেশনা দেবেন। উপস্থিত থাকবেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত শহীদ পরিবারের প্রতিনিধি, এবং আমন্ত্রিত অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতারা।


নিউজটি আপডেট করেছেন : জুলাই ৩৬ নিউজ

কমেন্ট বক্স