আন্তর্জাতিক ডেস্ক
নথি প্রকাশে অ্যাটর্নি জেনারেলকে নির্দেশ, নতুন প্রসিকিউটর নয় বলছে হোয়াইট হাউজ
মার্কিন ধনকুবের ও কুখ্যাত যৌন নিপীড়ক জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল-এর প্রতিবেদনকে “পুরোটাই মিথ্যা” দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে শিগগিরই গণমাধ্যমটির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেবেন।
সম্প্রতি ওয়ালস্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে এপস্টেইনের সঙ্গে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠতা ও ‘যোগাযোগের ধারাবাহিকতা’ তুলে ধরা হয়। এতে অনলাইনে শুরু হয় জল্পনা— ট্রাম্প কি তবে তাঁর পূর্বসূরি নিক্সন কিংবা ক্লিনটনের মতোই স্ক্যান্ডালে জর্জরিত হতে যাচ্ছেন?
‘সকালেই মামলা, রাতে সত্য উন্মোচন’
ট্রাম্প তার নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম Truth Social-এ এক পোস্টে বলেন:“ওয়ালস্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনটি ১০০ ভাগ মিথ্যা। তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমায় অপমান ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করেছে। আমরা শিগগিরই তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবো।”
এই অভিযোগের জবাবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অ্যাটর্নি জেনারেলকে এপস্টেইনের সঙ্গে সম্পর্কিত অধিক নথি প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন। এর আগে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার আগেই তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন, “এপস্টেইন ফাইলস” উন্মুক্ত করা হবে। তবে হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, নতুন কোনো বিশেষ প্রসিকিউটর নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না।
হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বলেন: “গণমাধ্যমে যেসব তথ্য ঘুরছে, সেগুলো ভিত্তিহীন। প্রেসিডেন্ট কোনো নতুন প্রসিকিউটর নিয়োগ দিচ্ছেন না। তবে অ্যাটর্নি জেনারেলকে কিছু তথ্য জানাতে পারেন।”
২০০৮ সাল থেকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে তদন্তের মুখে ছিলেন জেফরি এপস্টেইন। ২০১৯ সালে বিচার চলাকালে তিনি কারাগারে ‘আত্মহত্যা’ করেন, যদিও অনেকেই এই মৃত্যুকে ‘রহস্যজনক’ বা ‘হত্যা’ বলে মনে করেন।
দেড় সপ্তাহ আগে মার্কিন বিচার দপ্তর এপস্টেইনের মৃত্যুর সময়কার ১০ ঘণ্টার সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করে। কিন্তু একটি ৩ মিনিটের অংশ অনুপস্থিত থাকায় সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়। একই সময়ে এপস্টেইন ফাইলে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম থাকার গুঞ্জনও নতুন করে মাথাচাড়া দেয়।
এই প্রসঙ্গে টেকমিলিয়নিয়ার ইলন মাস্ক এবং সাবেক ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিস প্রধান— দু’জনেই দাবি করেন, “এপস্টেইন ফাইলে ট্রাম্পের নাম রয়েছে।”
রাজনৈতিক ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি?
ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারিতে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন। যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনায় কেঁপে উঠেছিল বিল ক্লিনটনের হোয়াইট হাউজ।
অনেকেই বলছেন, “এপস্টেইন ফাইলস হয়ে উঠতে পারে ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য একই ধরনের ধাক্কা।”
তবে রিপাবলিকান নেতার দাবি, ২০০৮ সালের পর থেকেই তিনি এপস্টেইনের সঙ্গে সকল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেন, এবং তিনি কখনও কোনো অপরাধে জড়িত ছিলেন না।
জুলাই ৩৬ নিউজ