জুলাই৩৬ নিউজ অনলাইন প্রতিবেদন।
২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে ভয়াবহ সেই বিমান দুর্ঘটনার, কিন্তু এখনও প্রিয় সন্তানের খোঁজ পাননি অনেক অভিভাবক ও স্বজন। হাসপাতাল, মর্গ কিংবা কোনো কেন্দ্রেই নেই তাদের খোঁজ। তাই আবারও ফিরে আসছেন মাইলস্টোন স্কুল ক্যাম্পাসে—যেখানে মৃত্যু নেমে এসেছিল আকাশ থেকে। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে খুঁজে ফিরছেন প্রিয় সন্তানের একটি চিহ্ন, একটি নিদর্শন।
আজকের (মঙ্গলবার, ২২ জুলাই) সকালটা ছিল অন্য রকম। মাইলস্টোন স্কুল প্রাঙ্গণ জুড়ে যেন এক অবর্ণনীয় শোকের ছায়া। যেখানে প্রতিদিন ভোরে মুখর থাকত শিশুদের কোলাহল, আজ সেখানে বিরাজ করছে কবরের নীরবতা। চেনা ক্লাসরুমগুলো এখন ধ্বংসস্তূপ। ছড়িয়ে আছে ছোট ছোট বই, রঙিন খাতা, ফাটা পেন্সিল, ছিঁড়ে যাওয়া ইউনিফর্ম আর খেলনার টুকরো।
মঙ্গলবার সকালে উত্তরার দিয়াবাড়ির দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। উদ্ধার অভিযানে অংশ নিচ্ছে বিমান বাহিনীর অনুসন্ধান দল। ধসে পড়া ভবনের প্রতিটি ইঞ্চি তারা খুঁটিয়ে দেখছেন—আশা, হয়তো কারও নিখোঁজ সন্তানকে পাওয়া যাবে।
স্কুলের গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে শতশত মানুষ। কেউ তার শিশুর খোঁজে ব্যাকুল, কেউ হয়তো জানেন, ফিরে আসবে না আর কখনও। তবু একটি খবরের আশায় দাঁড়িয়ে আছেন নির্বাক।
তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী আফিয়া উম্মে মরিয়মকে খুঁজে পেতে রাজধানীর এক হাসপাতাল থেকে আরেকটিতে ছুটেছেন তার মা, তানিয়া আক্তার। প্রতিটি জায়গায় গেছেন, কিন্তু ফিরেছেন শূন্য হাতে।
সকালে আবার ছুটে আসেন ধ্বংসস্তূপে। ভাঙা ভবনের ইটের নিচে, ধুলোবালির স্তূপে নিজের সন্তানকে খুঁজে বেড়ান তিনি। প্রতিটি ইটে হাত রেখে যেন শুনতে চান—কোথাও কি আছে আফিয়ার নিঃশ্বাস?
তানিয়া বারবার কান্নায় ভেঙে পড়েন, আর বলেন—
"আমার মেয়ে খুব হাসিখুশি ছিল। স্কুলে আসতে খুব ভালোবাসত। কে জানত, ওর সবচেয়ে প্রিয় জায়গাটাই হবে ওর মৃত্যুর জায়গা!"
এই শোক, এই ব্যথা শুধু তানিয়ার নয়—এটি এখন শত শত পরিবার আর পুরো জাতির। এমন একটি ভয়াবহ ট্র্যাজেডির দায় কার, তার উত্তর এখনও অজানা। তবে নিশ্চিত, এই ক্ষত সহজে সারবে না। এদের জন্য প্রতিটি দিনই হবে একেকটা দীর্ঘশ্বাস।
জুলাই ৩৬ নিউজ